বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা
পুরো দেশই যেন শোকে মুহ্যমান। সর্বত্র উড়ছে শোকের পতাকা। রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, অলিগলি পর্যন্ত ছেয়ে গেছে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাপানো কালো ব্যানার, পোস্টার আর প্ল্যাকার্ডে। লাল, সাদা আর কালো কালিতে লেখা শোকবাণী ছড়াচ্ছে শোকের ছায়া। বঙ্গবন্ধু মৃত্যুঞ্জয়ী। স্বাধীনতায় বিশ্বাসী প্রতি বাঙালির হৃদয়ে তার স্মৃতি যে অমলিন, শোকের মাস আগস্টে প্রতিটি স্থানে তার প্রতিফলন ঘটেছে। করোনা মহামারির মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে নানা অনুষ্ঠানমালায় কৃতজ্ঞ বাঙালি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আগস্ট বাঙালির জীবনে শুধু শোকের নয়, একটি অভিশপ্ত মাসও বটে। কারণ এই মাসেই ঘটেছিল ইতিহাসের সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম কলঙ্কজনক ট্র্যাজেডি। একাত্তরের পরাজিত ঘাতকদের হাতে এ মাসেরই ১৫ তারিখ সপরিবারে নিহত হয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু।বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা।
একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, স্বাধীন পতাকা। পলাশীর আম্রকাননে স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার দীর্ঘ ২১৪ বছর পর ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলার স্বাধীনতার নতুন সূর্য উদিত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ও নির্দেশে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতি যুদ্ধ করে ছিনিয়ে আনে লাল-সবুজের রক্তস্নাত স্বাধীন পতাকা। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় হত্যা করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ঘাতকরা চেয়েছিল ইতিহাসের চাকাকে পেছনে ঘোরাতে। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের বিচার ঠেকাতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি বিল পাস করা হয়। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা ইতিহাসের পাতা থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে পারেনি। বরং তারাই নিক্ষিপ্ত হয়েছে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনিরা আস্ফালন করে বলেছিল, পৃথিবীতে তাদের বিচার করার কারো সাধ্য নেই। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস ৭৫-এর ১৫ আগস্টের ঘাতকদের বাংলার মাটিতেই বিচারে ফাঁসি হয়েছে। ফাঁসির রায় কার্যকরের মাধ্যমে জাতি কিছুটা হলেও কলঙ্কমুক্ত হয়েছে।