মেসি না লেভানডফস্কি—বাংলাদেশের চোখে সেরা কে?

গতকাল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ছুঁয়েছেন রবার্ট লেভানডফস্কি। দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে টানা দুবার ফিফার বর্ষসেরা পুরুষ খেলোয়াড় ‘দ্য বেস্ট’ জিতেছেন পোলিশ স্ট্রাইকার। বিশ্বের সব জাতীয় দলের কোচ, অধিনায়ক, সাংবাদিক ও অনলাইনে ভক্তদের ভোট মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে সে পুরস্কার।

এই ভোটাভুটিতে স্বাভাবিকভাবেই ব্যক্তিগত পছন্দ–অপছন্দ উঠে আসে। সমর্থকেরা নিজেদের প্রিয় খেলোয়াড়কে ভোট দেন। জাতীয় দলের কোচ–অধিনায়ক নিজের যে খেলোয়াড়ের জেতার সম্ভাবনা আছে, তাঁকে ভোট দেন। যিনি নিজেকে ভোট দিতে পারেন না, তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী যেন ভোট না পান, সে চেষ্টা করেন।

Robert

এ কারণেই মুখে যতই লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো একে অপরের প্রশংসা করুন না কেন, নিজেদের সেরা পছন্দে প্রতিদ্বন্দ্বীকে জায়গা দেন না। প্রতিবছরের মতো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ফিফার এই ভোটে নিজেদের মত জানানো হয়েছে। তো, বাংলাদেশের কোচ–অধিনায়কদের চোখে সেরা কে?

প্রথমে যাওয়া যাক ছেলেদের ফুটবলে। এখানে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার হয়েছেন লেভানডফস্কি। দ্বিতীয় আর্জেন্টিনার মেসি এবং তৃতীয় মিসরের মো সালাহ। যদিও বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার চোখে লেভানডফস্কি সেরা নন। নিজে মিডফিল্ডার বলেই হয়তো চেলসির হয়ে এবার এনগোলো কান্তের খেলা আলাদাভাবে চোখে পড়েছে তাঁর।

চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা মিডফিল্ডারকেই সেরা মনে হয়েছে জামালের। তাঁর দ্বিতীয় সেরাও ফ্রান্সের খেলোয়াড়। রিয়ালের হয়ে দুর্দান্ত বছর কাটানো এবং নেশনস লিগজয়ী করিম বেনজেমা হয়েছেন দ্বিতীয়। আর লেভানডফস্কি তৃতীয়।

ফিফার ভোটাভুটি হয়েছে গত ২২ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ে বাংলাদেশ দলের কোচ কেউ ছিলেন না। তাই ভোট দেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছিলেন ‘টেকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর’ পল স্মলি। তাঁর চোখে সেরা লেভানডফস্কিই। দুইয়ে আছেন কেভিন ডি ব্রুইনা। আর তিনে মো সালাহ। বাংলাদেশের সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে সেরার ভোট পেয়েছেন লেভানডফস্কি। দুই আর তিনে জর্জিনিও ও মেসি।

ছেলেদের ফুটবলে সেরা কোচ হয়েছেন টমাস টুখেল। দায়িত্ব পাওয়ার মাত্র ছয় মাসের মধ্যে চেলসিকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানোর পুরস্কার পেয়েছেন জার্মান কোচ। দুই আর তিনে ইতালিকে ইউরো জেতানো রবার্তো মানচিনি এবং ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জেতা পেপ গার্দিওলা। জামাল ভূঁইয়া এক আর দুইয়ে রেখেছেন টুখেল ও মানচিনিকে। তবে তাঁর তিনে আছেন ১০ বছর পর ইন্টার মিলানকে সিরি ‘আ’ জেতানো আন্তোনিও কন্তে।

ওদিকে পল স্মলির সেরা মানচিনি। দ্বিতীয় আতলেতিকো মাদ্রিদকে লা লিগা জেতানো দিয়েগো সিমিওনে। আর তিনে জায়গা পেয়েছেন টুখেল। বাংলাদেশের সাংবাদিকের ভোটে সেরা টুখেল, দুইয়ে আর্জেন্টিনাকে কোপা আমেরিকা জেতানো লিওনেল স্কালোনি। আর তিনে সিমিওনে।

এবার নজর দেওয়া যাক নারী ফুটবলে। বার্সেলোনার হয়ে ট্রেবল জেতা আলেক্সিস পুতেয়াস কিছুদিন আগেই নারীদের ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। গতকাল রাতে ফিফা বেস্টও জিতে নিয়েছেন এই তারকা। পুরস্কার জয়ের পথে হারিয়েছেন চেলসির হয়ে চারটি শিরোপা জেতা ও চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলা স্যাম কের ও বার্সেলোনা সতীর্থ জেনিফার এর্মোসোকে।

বাংলাদেশের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের চোখে অবশ্য চেলসির হয়ে গত মৌসুমে ৩১ গোল করা কেরই সেরা। সাবিনার চোখে দ্বিতীয় সেরা বার্সেলোনার হয়ে গত মৌসুমে ৩৭ গোল করা এর্মোসো। আর সাবিনার তিনে আছেন ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে গত মৌসুমে ১৫ গোল করা ফরোয়ার্ড এলেন হোয়াইট।

বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানীর চোখে হোয়াইটই বছরের সেরা খেলোয়াড়। অলিম্পিকে ব্রিটেনের হয়ে ৬ গোল করেছিলেন হোয়াইট। দুইয়ে আছেন কানাডার হয়ে অলিম্পিক জেতা ফরোয়ার্ড ক্রিস্টিনা সিনক্লেয়ার। আর তিনে ক্লাবের সাফল্যের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জেতা কের। আর বাংলাদেশের মিডিয়ার ভোটে সেরা বার্সেলোনার এর্মোসো প্রথম, দুইয়ে বার্সেলোনারই ক্যারোলিন গ্রাহাম ইয়ানসেন। আর তিনে আছেন সিনক্লেয়ার।

ফিফা বেস্টে সেরা হয়েছেন চেলসিকে চার শিরোপা জেতানো ইংলিশ কোচ এমা হায়েস। দ্বিতীয় হয়েছেন বার্সেলোনাকে ট্রেবল জেতানো কোচ লুইস কোর্তেস। আর তিনে আছেন নেদারল্যান্ডস নারী জাতীয় দলের সাবেক কোচ, ইংল্যান্ড নারী জাতীয় দলের বর্তমান কোচ সারা উইগম্যান। যদিও বাংলাদেশের অধিনায়ক সাবিনার চোখে উইগম্যানই সেরা। বার্সেলোনাকে ট্রেবল জেতানো কোর্তেসকে সেরা তিনেই রাখেননি সাবিনা। তাঁর চোখে হায়েস দ্বিতীয়, আর তৃতীয় কানাডাকে অলিম্পিক জেতানো বেভ প্রিস্টম্যান।

কোচ গোলাম রব্বানীও সেরা তিনে জায়গা দেননি কোর্তেসকে। তাঁর চোখে সেরা হায়েস, দুইয়ে উইগম্যান আর তিনে প্রিস্টম্যান। বাংলাদেশের মিডিয়ার চোখেও ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে দাপট দেখানো গুরুত্ব পায়নি। মিডিয়ার চোখে সেরা উইগম্যান। দুইয়ে প্রিস্টম্যান। আর সুইডেনকে অলিম্পিকের ফাইনালে নেওয়া কোচ পিটার গেরহার্ডসন তৃতীয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *