বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমণের হার বাড়লেও আগের তুলনায় মৃত্যুহার কমেছে। যুক্তরাজ্যেই যেমন গত ১ জুলাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছিল সর্বনিম্ন। তারপর থেকে সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও মৃত্যুহার কিন্তু কমছে দেশটিতে।
করোনা মহামারির শুরুর দিকের সঙ্গে এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এর কারণ হিসেবে কেউ বলছেন এখন কম বয়সী ব্যক্তিরা বেশি সংক্রমিত হচ্ছে, কেউ বলছেন শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কারণেই এ সুফল মিলছে।
যুক্তরাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্যমতে, গত ১ জুলাই ছিল দিন হিসেবে সবচেয়ে কম সংক্রমণের সময়। ওই সময়ে এমনকি গড় সংক্রমণের হার ৫৭৪-এ নেমে এসেছিল। কিন্তু ৩০ আগস্ট নাগাদ তা বেড়ে আবার দিনে ১ হাজার ৪০২ জনে দাঁড়ায়। একই সময়ে মৃত্যুহার কিন্তু ধারাবাহিকভাবে কমেছে। এই সময়ে দিনে ৩৭ দশমিক ৪ থেকে নেমে ৪ দশমিক ৬ জনে দাঁড়ায় মৃত্যুহার। এমনটি ঘটার কারণ কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না। তবে গবেষকেরা কিছু ব্যাখ্যা হাজির করার চেষ্টা করছেন।
কম বয়সীরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি
ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগের (পিএইচই) ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্যমতে, আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দুই-তৃতীয়াংশের বয়সই ৪০ বছরের নিচে। কয়েক মাস আগে মহামারি যখন চরমে, তখন এই বয়সীদের মধ্যে সংক্রমণের হার ছিল ২৮ শতাংশ। এটি দুটি তথ্য দেয়। এক, বয়স্ক ব্যক্তিরা কম আক্রান্ত হচ্ছেন। দুই, কোভিড-১৯ ঠেকাতে নেওয়া বিভিন্ন বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। এ কারণে তুলনামূলক কম বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমণ বাড়ছে।
এ বিষয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যানের অধ্যাপক ডেভিড স্পিজেলহল্টার ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, বয়স প্রতি ছয় বছর বৃদ্ধিতে কোভিড-১৯-এ মৃত্যুঝুঁকি দ্বিগুণ হয়।
অর্থাৎ, আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যার বয়স যত বেশি, ঝুঁকি তত বেশি। এ কারণেই আগস্টের শেষ সপ্তাহে ২০-এর কোটায় থাকা ২ হাজার ৪২ জন আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা নেওয়ার তেমন প্রয়োজন হয়নি।

বয়স্ক ব্যক্তিরা নিয়ম মেনে চলছেন
পিএইচইর তথ্যমতে, আগস্টের শেষ সপ্তাহে সত্তরোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৭৪। অথচ এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে এ সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৭৭০। নতুন করোনাভাইরাসে এই বয়সী মানুষই বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। এই বয়সী ব্যক্তিরা সংক্রমিত হলে ভয়াবহ অসুস্থতা দেখা দেয় তাঁদের শরীরে।
স্বাধীন দাতব্য স্বাস্থ্য সংস্থা কিং’স ফান্ডের সিনিয়র ফেলো ড. বীণা র্যালিঘের মতে, বয়স্ক ব্যক্তিদের বেশির ভাগই হয়তো সাবধানতা অবলম্বন করছেন বা তাঁদের সুরক্ষিত রাখা হয়েছে।