ডাকাতির মামলায় র‍্যাবের সাবেক ৫ সদস্যের কারাদণ্ড

নয় বছর আগের এক ডাকাতির মামলায় পুলিশের উপপরিদর্শকসহ (এসআই) পাঁচজনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭–এর বিচারক শহিদুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
এই মামলায় দণ্ডিত পাঁচ আসামি র‍্যাবে কর্মরত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি হলেন মোসাদ্দেক হোসেন, মনিরুল ইসলাম, লিটন হাওলাদার, সাজ্জাদ হোসেন ও লুৎফর রহমান খান। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মোসাদ্দেক হোসেন ও লিটন হাওলাদার কারাগারে আছেন। অন্যরা পলাতক।
মামলা থেকে আলম খান ও স্যামুয়েল নামের দুজন আসামি খালাস পেয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি মাহবুব আলম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, সার্ভিস হোল্ডার রাষ্ট্রের কর্মচারী অর্থাৎ জনগণের সেবক। আসামিরা রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে ডাকাতির মতো ঘৃণ্য অপরাধের করেছেন।

law pic

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ অনুযায়ী, ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার সময় জেকে সেলস অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক মইনুদ্দিন কাভার্ড ভ্যানে করে ১৮ লাখ টাকা বনানীর সাউথইস্ট ব্যাংকে জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। কাভার্ড ভ্যানটি বনানীর লোটাস কামাল ভবনের সামনে পৌঁছালে র‍্যাবের পোশাক পরা একজন মোটরসাইকেল করে কাভার্ড ভ্যানের সামনে আসেন এবং গতিরোধ করেন। তখন তিনি বলেন, গাড়িতে অবৈধ মালামাল আছে। গাড়ি চেক করতে হবে। গাড়ির পেছনের দরজা খুলে দিতে বলেন। চালক পেছনের দরজা খুলে দেন। এ সময় পেছন থেকে আসে একটি মাইক্রোবাস। সেখানে র‍্যাবের পোশাক পরা চার থেকে পাঁচজন লোক উপস্থিত ছিলেন। চালক কাভার্ড ভ্যানের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাগভর্তি টাকাসহ প্রতিষ্ঠানটির হিসাব বিভাগের সেলিম ও প্রকৌশলী হানিফকে মাইক্রোবাসে তোলেন। চালককে হুমকি দিয়ে বলে যান, যে দুজনকে তাঁরা ধরেছেন, তাঁদের র‍্যাব-১ অফিসে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আসামিরা তাঁদের র‍্যাব অফিসে না নিয়ে ভাষানটেকের দিকে নিয়ে যান। মাটিকাটা নামক জায়গায় নামিয়ে দেন। টাকার ব্যাগ নিয়ে চলে যান আসামিরা।

 

এ ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় মামলা হয়। আসামি লুৎফুর রহমান খান জবানবন্দিতে বলেন, মোসাদ্দেকের সঙ্গে লিটনের মাধ্যমে তাঁর পরিচয় হয়। ঘটনার দিন মোসাদ্দেক তাঁকে বলেন, নিকুঞ্জ এলাকায় একটি গাড়িতে অবৈধ মালামাল থাকবে। তাঁরা সেই গাড়ি আটকাবেন। কথামতো সেদিন সকাল সাড়ে নয়টায় খিলক্ষেত উড়ালসেতুর নিচে লিটন দেখা করেন সাজ্জাদের সঙ্গে। তাঁদের সঙ্গে মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল ছিল। সাজ্জাদ র‍্যাবের পোশাকে ছিলেন। কিছুক্ষণ পর এখানে একটি কাভার্ড ভ্যান আসে, তখন সাজ্জাদ সেই কাভার্ড ভ্যানের গতিরোধ করেন। তিনিসহ অন্যরা মাইক্রোবাস থেকে নামেন। সাজ্জাদ তাঁর সঙ্গে থাকা পিস্তল বের করেন। কাভার্ড ভ্যানে অবৈধ মালামাল থাকার কথা বলেন। কাভার্ড ভ্যানের পেছনের দরজা খুলে দিলে আসামিরা কাভার্ড ভ্যানের ভেতরে ঢুকে টাকাভর্তি দুটি কালো ব্যাগ নিয়ে বের হন। কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে থাকা দুজনকে পরে মাইক্রোবাসে তোলা হয়। পরে তাঁরা মিরপুরের দিকে রওনা হন। আর সাজ্জাদ মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *