বিশ্বের পুরোনো ১০ মেট্রোরেল

বিশ্বের পুরোনো ১০ মেট্রোরেল

বাংলাদেশ  মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করেছে।  দেশের গণপরিবহনে নতুন যুগের সূচনা হয়।  বিশ্বে মেট্রোরেল চালু হয়েছে এক শ বছরের বেশি , যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬২টি দেশের দুই শতাধিক শহরে  মেট্রোরেল চালু হয়েছে। আসুন, একনজরে বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ১০টি মেট্রোরেল–ব্যবস্থা সম্পর্কে জেনে নিই—

metrorail
সবচেয়ে পুরোনো মেট্রোরেল

১.লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড

বিশ্বে প্রথম মেট্রোরেল চালু হয় যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে। এটা ‘লন্ডন টিউব’ নামেও পরিচিত। ১৮৬৩ সালের জানুয়ারিতে লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড স্টিম ইঞ্জিনচালিত ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ১৮৯০ সালে এটিই হয়ে ওঠে বিশ্বের প্রথম মেট্রোরেল। সেই সময় ইঞ্জিনের বদলে বৈদ্যুতিক লাইনের ট্রেন মাটির নিচ দিয়ে চলা শুরু করে। বর্তমানে ৪০০ কিলোমিটার যাত্রাপথের এই মেট্রোতে আছে ১১টি লাইন ও ২৭২টি স্টেশন। এই মেট্রোরেলের ৪৫ শতাংশ যাত্রাপথ মাটির নিচে। লন্ডনের এই মেট্রোরেল-ব্যবস্থা প্রতিদিন ৪৮ লাখ যাত্রী পরিবহন করে। বিশ্বের ১১তম ব্যস্ত মেট্রোরেল এটা।

২.বুদাপেস্ট মেট্রো

হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে মেট্রোরেল চালু হয় ১৮৯৬ সালের মে মাসে। বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে পুরোনো মেট্রোরেল এটি। হলুদ, লাল, নীল ও সবুজ—ভিন্ন গন্তব্যের এ চারটি লাইনে চলাচল করে বুদাপেস্ট মেট্রো। বেগুনি লাইন নামে আরেকটি নতুন রুট সংযুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০০২ সালে এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেসকো।

৩.গ্লাসগো সাবওয়

গ্লাসগো সাবওয়ে হলো স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরের পাতালরেল–ব্যবস্থা। ১৮৯৬ সালে ডিসেম্বরে এটা চালু হয়। লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড এবং বুদাপেস্ট মেট্রোর পরে বিশ্বের তৃতীয় পুরোনো ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল–ব্যবস্থা এটি। গ্লাসগো মেট্রোরেল–ব্যবস্থার পুরোটাই মাটির নিচে। শুরু থেকেই এর দৈর্ঘ্য ছিল ১০ দশমিক ৫ কিলোমিটার। গ্লাসগো মেট্রোরেল বিশ্বের একমাত্র মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক, যেটি পরবর্তী সময়ে আর সম্প্রসারিত হয়নি।

৪.শিকাগো এলিভেটেড

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরোনো মেট্রোরেল–ব্যবস্থা রয়েছে জনবহুল ও ব্যস্ততম শিকাগো শহরে। এটি ‘শিকাগো এল’ বা ‘শিকাগো এলিভেটেড’ নামেও পরিচিত। শিকাগো ট্রানজিট অথরিটি (সিটিএ) এই মেট্রোরেল–ব্যবস্থা পরিচালনা করে। এটির মোট দৈর্ঘ্য ১০২ দশমিক ৮ মাইল বা প্রায় ১৬৫ দশমিক ৪ কিলোমিটার। চালু হয় ১৮৯৭ সালে।

৫.প্যারিস মেট্রো

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে মেট্রোরেল চালু হয় ১৯০০ সালে। এতে রয়েছে ১৬টি লাইন ও ৩০৮টি স্টেশন। যার বেশির ভাগই প্যারিস শহরের সীমানায় অবস্থিত। এটা প্যারিস মেট্রোপলিটন নামে পরিচিত, সংক্ষেপে একে বলা হয় প্যারিস মেট্রো। এই যোগাযোগব্যবস্থার সঙ্গে জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারিসহ প্যারিসের অন্যতম সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোকেও সংযুক্ত করা হয়েছে। প্যারিস মেট্রোর প্রবেশ ছাউনিতে আঁকা রয়েছে ফরাসি স্থপতি ও শিল্পী হেক্টর গুইমারের চিত্রকর্ম।

৬.বোস্টন সাবওয়ে

যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন শহরের মেট্রোরেল হলো বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো মেট্রো–ব্যবস্থার একটি। শহরটির বুক চিঁড়ে এই মেট্রোরেল চালু হয় ১৯০১ সালে। সেই হিসেবে, বোস্টন মেট্রো সুনামের সঙ্গে ১২৪ বছর পার করছে। এটা ‘বোস্টন টি’ নামেও অনেকের কাছে পরিচিত।

৭.বার্লিন সাবওয়ে

জার্মানির রাজধানী বার্লিনে ১৯০২ সালে চালু হয় মেট্রোরেল। এটি শুধু ইউরোপের নয়, বিশ্বের অন্যতম পুরোনো মেট্রোরেল–ব্যবস্থা। চালু হয় ১৯০২ সালে। এই মেট্রোরেল–ব্যবস্থার বেশির ভাগই মাটির নিচে। কিছু অংশ রয়েছে এলিভেটেড। প্রায় ১৪৬ কিলোমিটারের মেট্রো–ব্যবস্থায় রয়েছে ১০টি পৃথক লাইন, ১৭৩টি স্টেশন। বার্লিন মেট্রোর ট্রেনগুলো হলুদ রংয়ের।

৮.এথেন্স সাবওয়ে

গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের বুকজুড়ে চলে এথেন্স সাবওয়ে। শুধু ইউরোপের নয়, বিশ্বের অন্যতম পুরোনো মেট্রোরেল–ব্যবস্থা এটি। চালু হয় ১৯০৪ সালে। প্রতিবছর লাখো মানুষ এই মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেন।

৯.নিউইয়র্ক সিটি সাবওয়ে

নিউইয়র্ক শহর যেমন কখনো ঘুমায় না, ঠিক তেমনই নিউইয়র্কের সিটি সাবওয়ে। বছরের ৩৬৫ দিন, ২৪ ঘণ্টাই চলে এই সাবওয়ে। প্রতিদিন প্রায় ৩৫ লাখ যাত্রী পরিবহন করে এই মেট্রোরেল। এটির নামে সাবওয়ে থাকলেও নিউইয়র্ক সিটি সাবওয়ের বেশির ভাগ অংশ মাটির ওপরে চলে। এটি উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে দীর্ঘ ও ব্যস্ততম মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক। সেই সঙ্গে বিশ্বের সেরা মেট্রো–ব্যবস্থার মধ্যে অন্যতম। এটি চালু হয় ১৯০৪ সালের ২৭ অক্টোবর।

১০.ফিলাডেলফিয়া মেট্রো

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম এবং দেশটির পঞ্চম জনবহুল শহর ফিলাডেলফিয়া। শহরটিতে ১৯০৭ সালে চালু হয় ফিলাডেলফিয়া মেট্রো। এটি এসইপিটিএ মেট্রো নামেও পরিচিত। এর লাইনের দৈর্ঘ্য ১২৬ কিলোমিটার ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *