ভারতকে হারিয়েই ২০২০ সালে প্রথমবারের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। দুই বছর পর সেই ভারতের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াই হেরে বিশ্বকাপের স্বপ্ন ভঙ্গ হলো রকিবুলদের।
কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ভারতের বোলারদের দাপটে যে মাত্র ১১১ রানেই অল আউট হয়ে গেছে বাংলাদেশের যুবারা। এত কম রান করে ভারতের মতো দলের বিপক্ষে জেতার আশা করা অতি বাড়াবাড়িই হয়তো। বোলাররা কিছুটা আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে রকিবুলদের।
উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান আংক্রিস রঘুভানশি ৪৪ রান করে ভারতের বাকি ব্যাটসম্যানদের কাজটা সহজ করে দেয়। দুই পেসার তানজিম হাসান শুরুতে আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হারনুর সিংকে আউট করলেও রঘুভানশির দৃঢ়তা বেশি ক্ষতি হতে দেয়নি। এরপর রিপন মন্ডলের দারুণ বোলিংয়ে দ্রুত ৪ উইকেট হারালেও অধিনায়ক যশ ডুলের অপরাজিত ২০ রানের ইনিংসে ৫ উইকেট হাতে রেখেই জিতেছে ভারতীয় যুবারা।
বাংলাদেশের যুবারা অবশ্য এবারের টুর্নামেন্টে শিরোপা ধরে রাখার মতো খেলাই দেখাতে পারেনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মাত্র ৯৭ রানেই অল আউট হয়ে গিয়ে ৭ উইকেটে হেরেছিলেন রকিবুলরা। কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে পরের দুই ম্যাচে দাপুটে জয় পেলেও সেটা খুবই প্রত্যাশিত ছিল। কারণ, এই পর্যায়ে দুটি দলের সঙ্গেই বাংলাদেশের অনেক ব্যবধান। কিন্তু ইংল্যান্ডের পর আবার আইসিসির পূর্ণ সদস্য ভারতের সামনে পড়তেই ব্যাটিংয়ের দৈন্যদশা বেরিয়ে পড়ল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ দলের।
অথচ ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক রকিবুল বলেছিলেন, কিছুদিন আগেই অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে খেলে আসায় সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে এই ম্যাচে। বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে অবশ্য মনে হয়েছে, ওই ম্যাচের মতো এখানেও হারই জুটতে যাচ্ছে রকিবুলদের ভাগ্যে।
অ্যান্টিগার নর্থ সাউন্ডের স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ওভারেই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মাহফিজুল ইসলামকে হারিয়ে যে ধসের শুরু, সেটা চলতে থাকল ২৪তম ওভার পর্যন্ত। ততক্ষণে ৫৬ রানেই ৭ উইকেট নেই বাংলাদেশের। এরপরও যে দলের রানটা ১০০ রান হলো সেটার কৃতিত্ব এস এম মেহরব ও আশিকুর জামানের। দুজন মিলে অষ্টম উইকেটে গড়েন ৫০ রানের জুটি। কিন্তু ৪৮ বলে ৩০ রান করে মেহেরব ফেরার পর আর ৫ রান যোগ করতেই গুটিয়ে যায় বাংলাদশের ইনিংস। মেহেরব ছাড়া দুই অঙ্কের স্কোর শুধু আইচ মোল্লা (১৭) ও আশিকুর জামানের (১৬)।
ভারতের বোলারদের প্রায় সবাই-ই ভুগিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। তবে মূল কাজটা করে দিয়েছেন বাঁহাতি পেসার রবি কুমারই। বাংলাদেশের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে ধসটা তিনিই নামিয়েছেন। ৩ উইকেটের জন্য ৭ ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ১৪। বাঁহাতি স্পিনার ভিকি ওসওয়াল ৯ ওভারে ২৫ দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট।