রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১৬ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ১০ শয্যার হাসপাতালে করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে। উপজেলার করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল, সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর আহমদ।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা টিটু চন্দ্র শীল বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা ১২ হাজারের মতো। এ পর্যন্ত এই দ্বীপে কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। ১ হাজার ৩৫৭ জন নিবন্ধনপ্রক্রিয়া শেষ করলেও রোববার প্রথম ডোজে ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে আড়াই থেকে তিন হাজার নারী-পুরুষকে টিকা দেওয়ার কথা। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৮৮৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। যাঁরা নিবন্ধন করেননি, তাঁদের জরুরি ভিত্তিতে নিবন্ধন করিয়ে টিকার আওতায় আনা হচ্ছে। সোমবারও এই কার্যক্রম চলবে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, টেকনাফ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ থাকলেও সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছাড়া বাকি ৫টি ইউনিয়ন পরিষদে গত ৭ জুলাই ৩ হাজার নারী-পুরুষ (প্রথম ডোজ) ও ৭ আগস্ট ৩ হাজার ব্যক্তিকে (দ্বিতীয় ডোজ) এবং ২৮ সেপ্টেম্বর ৭ হাজার ৫০০ ব্যক্তিকে (প্রথম ডোজ) টিকার আওতায় আনা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, করোনার টিকা নিতে সকাল থেকে সেন্ট মার্টিন ১০ শয্যার হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কয়েক শ নারী-পুরুষ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে একটি করে মাস্ক পরিয়ে দেওয়া হয়।
টিকা গ্রহণকারী রমজান আলী বলেন, ‘এত দিন ভয়ে ছিলাম। লোকমুখে অনেক কথা শুনেছি। টিকা গ্রহণ করলাম। হাতের বাহুতে সুই ঢোকানোর সময় হালকা ব্যথা লেগেছে। পরে আর কোনো সমস্যা হয়নি। সবাইকে এই টিকা গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, করোনার টিকা নিয়ে দ্বীপের মানুষের ধারণা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। তাই কয়েক দিন ধরে দ্বীপে করোনার টিকা দেওয়ার বিষয় নিয়ে মাইকিং করা হয়েছে। মিথ্যা গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে টিকা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করায় রোববার বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষ টিকা দিতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েছেন। চলতি মাসেই পর্যটন মৌসুম শুরু হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, দ্বীপের মানুষের আগ্রহ দেখে খুবই ভালো লাগল। তবে এই দ্বীপে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। এই ইউনিয়ন শতভাগ করোনামুক্ত ছিল।
ff