ফুলের নাম চাঁপা

আমাদের দেশে চাঁপা নামে যতগুলো ফুল আছে,তার খ্যাতি মুলত সুগন্ধির জন্য। আর ওদের বর্ণবৈচীত্র্য হচ্ছে আমাদের বাড়তি পাওনা।চাঁপার খ্যাতি কিন্তু বিশ্বজোড়া। আমাদের দেশে এই চাঁপা ফুলের সংখ্যা একেবার কম নয়।তবে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে চাঁপা নামের সব ফুলই কিন্তু চাঁপা নয়।প্রচলিত নাম চাঁপা হলেও মুল চাঁপাফুলের সঙ্গে বৈশিষ্ট্যগত অনেক পার্থক্য রয়েছে। প্রকৃত চাঁপার ইংরেজি নাম ম্যাগনোলিয়া।প্রকৃত চাঁপাফুল এবং শুধুমাত্র নামেই চাঁপা, এমন কয়েকটি ফুলের সাথে পরিচয় করে দিচ্চি
স্বর্ণচাপা

স্বর্ণচাপা ফুল উঁচু ভূমিতে বেশি দেখা যায়, তবে সমতল ভূমিতেও এই ফুল ফোটে কখনো কখনো। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে স্বর্ণচাপা প্রায়শই নজরে পড়ে। স্বর্ণচাপা ফুলের গাছের কান্ড ধূসর রঙের, উন্নত এবং সরল হয়। পাতা দেখতে চ্যাপ্টা, ঘনবদ্ধ এবং উজ্জ্বল সবুজ রঙের হয়ে থাকে। স্বর্ণচাপা ফুলের রঙ বিভিন্ন রকমের হয়, কিন্তু বাংলাদেশে হলুদ রঙের ফুলই বেশি দেখা যায়। আবহাওয়া, মাটি এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন রঙের স্বর্ণচাপা ফোটে। ফুল ফোটার সময় গ্রীষ্মের প্রথম ভাগ থেকে বর্ষা-শরৎ পর্যন্ত।

স্বর্ণচাপা
জহুরিচাঁপা
(বৈজ্ঞানিক নাম Magnolia liliiferaMagnoliaceae পরিবারের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ প্রজাতি।
জহুরিচাঁপা এক প্রকার ফুলের গাছ। জহুরিচাঁপা মূলত জাভা দ্বীপপুঞ্জের গাছ। ২ মিটার উঁচু চির সবুজ ঝোপাল গাছ। পাতা ভল্লাকার, ৭ থেকে ১২ সেমি লম্বা, খসখসে। আগা ও গোড়ার দিক সরু। হলদেটে-সাদা, সুগন্ধি, প্রায় ৩ সেন্টিমিটার চওড়া, সবুজ বত্তাংশে আংশিক ঢাকা থাকে। বাটিবৎ, সম্পূর্ণ খোলা না, পাপড়ি ৬-৯টি। গ্রীষ্ম-বর্ষায় বেশি ফুল ফোটে, পাতার গোড়া থেকে একেকটি ফোটে সন্ধ্যার আগে আগে। কলম কেটে চাষ হয়।
যখন ফোটে তখন মনে যেন মুক্ত পাপড়িতে হাসছে । বেশী  ‍ফুল ফোটে ,পাতার গোড়ার দিক থেকে ,কতগুলো ফোটে ভোরের আগে ।
কাঁঠালি চাঁপা
-কাঁঠালি চাঁপা বা কাঁঠালি চম্পা হলুদ রঙের ফুল, যা থেকে কাঁঠালের তীব্র সুবাস নির্গত হয়ে থাকে।
– উদ্ভিদ বিদ্যা অনুযায়ী এটি Annonaceae পরিবারের সদস্য; বৈজ্ঞানিক নাম Artabotrys hexapetalus ।
– কোনো কোনো এলাকায় একে হাঁড়ি চম্পা বলেও আখ্যায়িত করা হয়। ভারতবর্ষে এটি মনোরঞ্জিনী নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত। ভারত, মিয়ানমার এবং শ্রীলংকার কোনো কোনো স্থানে একে ঊলধহম বষধহম বলেও অভিহিত করা হয়।
-গাছটি মাঝারি আকারের লতানো গুল্ম, ৮-১০ ফুট লম্বা। তবে এর কাষ্ঠল লতা দীর্ঘ হয়ে থাকে। শাখা অবনত অর্থাৎ ঝুঁকে থাকে। কাঁঠালি চাঁপার উজ্জ্বল সবুজ পাতা ৪ থেকে ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়।
-পত্রফলকের নিম্নতল ফ্যাকাসে সবুজ। ফুল ফোটে বর্ষায়।
-শুরুতে সবুজাভ ফুলটি ধীরে ধীরে কড়া হলুদ বর্ণ ধারণ করে। ফুলের রঙ হলদেটে বা সোনালি হলুদ, কাক্ষিক, পাপড়ি সংখ্যা ৬।
মুহাইমিনুল ইসলাম
উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *