যেসব কারণে পুরুষদের করোনার ঝুঁকি বেশি

শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বজুড়েই পুরুষের করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার হার নারীদের তুলনায় বেশি। এমনকি সংক্রমিত হওয়ার পর জটিলতা, রোগের তীব্রতার হার এবং এ রোগে মৃত্যুহারও পুরুষদের বেশি। এর কিছু কারণ জানা গেছে। বিশদ জানতে আরও গবেষণা চলছে। যতটুকু জানা গেছে, তার ভিত্তিতেই বিজ্ঞানীরা পুরুষদের জীবনযাপনের পদ্ধতির বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

পুরুষেরা ঝুঁকিতে বেশি যে কারণে

হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগ নারীর তুলনায় পুরুষের বেশি হয়। এই রোগগুলো থাকলে করোনার জটিলতা বাড়ে। করোনায় মৃত্যুর অন্যতম নিয়ামকও এগুলো। এ ছাড়া ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা পুরুষের তুলনায় নারীর বেশি থাকে বলে গবেষণায় জানা গেছে।

বিজ্ঞানীরা পুরুষের সেক্স হরমোন এন্ড্রোজেনকেও (যেমন টেস্টোস্টেরন, ডাইহাইড্রো-টেস্টোস্টেরন) জটিলতার জন্য দায়ী করেছেন। এন্ড্রোজেন হরমোন করোনাভাইরাসকে দেহকোষে প্রবেশে সাহায্য করে বলে তাঁরা দাবি করেছেন।

ধূমপান, মদ্যপানের অভ্যাস নারীদের তুলনায় পুরুষদের বেশি। ধূমপানে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে করোনার জটিলতাও বেশি হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। ধূমপান ও মদ্যপানে হৃদ্‌রোগসহ নানা ধরনের জটিলতার ঝুঁকি বাড়ে।

ঝুঁকি এড়াতে যা করবেন

করোনার প্রাদুর্ভাব থেকে শিগগির মুক্তির আশ্বাস বিজ্ঞানীরা দিতে পারছেন না। এই ভাইরাসের সংক্রমণের স্বীকৃত কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি নেই, কার্যকর টিকাও উদ্ভাবিত হয়নি এখনো। কাজেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাই আপাতত একমাত্র কৌশল। এ ক্ষেত্রে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।

সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের মাধ্যমে হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বাইরের খাবার, কোমল পানীয়, ধূমপান ও মদ্যপান এড়াতে হবে। ভিড় ও জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যত ব্যস্ততাই থাকুক, নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ৪০ বছরের বেশি বয়সীরা নিয়মিত রক্তচাপ, ব্লাড সুগার ইত্যাদি পরিমাপ করবেন। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো কোনো রোগ থাকলে উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

ডা. এ বি এম কামরুল হাসান, সহকারী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *