হারিয়ে যাওয়া এক বানর

পৃথিবীটা বড় বৈচিত্র্যময়। এই বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে স্রষ্টার একটি বড় নেয়ামত হলো পশুপাখি। আর এই পশুপাখি এখন বিলুপ্তি পথে। প্রতিনিয়ত পশুপাখি হারিয়ে যাচ্ছে এই পৃথিবীর বুক হতে। তারই একটি উদাহরণ হিসেবে বুদ্ধিমান এক বানর প্রজাতি বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে গেল। আর মাত্র একটি বানর কক্সবাজারের টেকনাফ বনাঞ্চলের কেরুনতলীতে টিকে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবশেষ বানরটিও হয়তো কিছুদিনের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কারণ, তার কোনো সঙ্গীসাথি নেই। প্রজননের কোনো উপায়ও নেই। মাত্র এক প্রজন্মের ভেতর অতি দ্রুতই একটি বানর প্রজাতির বড় দল তার বুনো পরিবেশ থেকে হারিয়ে গেল। প্রাণিজগতের এ এক অপূরণীয় ক্ষতি।

 

গবেষক বন্ধু তারিক কবির খুব আফসোস করে বললেন, হয়তো শেষ বানরটি মারা গেছে। তিনি দীর্ঘদিন থেকে বানরটির ওপর নজর রাখছিলেন। পুরো এলাকাটি তাঁর চেনা।

প্যারাইল্লা বানরের সংখ্যার ওপর একটি পরিষ্কার ধারণা গবেষকদের আছে। ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহসান বানর প্রজাতিটির ওপর প্রথম জরিপ চালান। সে সময় ২৫৩টি বানর ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। টেকনাফের যে অঞ্চলে বাদাবন ছিল, মূলত সে অঞ্চলেই এ বানর প্রজাতি দেখা যেত। এ সময়ের মধ্যে টেকনাফ অঞ্চলের বেশ কিছু প্যারাবন কেটে লবণ আর মাছ চাষের উপযোগী করা হয়। বানরগুলো তাদের প্রিয় আবাসস্থল হারিয়ে ফেলে।

প্যারাইল্লা বানর বিশ্বব্যাপী সংকটাপন্ন একটি প্রাণী। মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে এই প্রজাতির বানর রয়েছে। আর দশটি বানরের চেয়ে সত্যিই বুদ্ধিমান। বানরটি ভালো সাঁতারুও বটে। শত্রুর হাত থেকে বাঁচতে তাদের সাঁতার কাটতে দেখা যায়। জলের ওপর উঁচু গাছে তারা ঘুমাতে পছন্দ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *