তুলসীর তুলনা নেই

পরিচিতি

বাংলা নামঃ তুলসী, ইংরেজি নামঃ Holy Basil, বৈজ্ঞানিক নামঃ Ocimum sanctum, গোত্রঃ Lamiaceae বা Labiatae.

বাসস্থান ও প্রকৃতি 

তুলসী ছোট একটি গুল্ম জাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। বাংলাদেশ ও ভারতের সর্বত্রই তুলসীর দেখা মেলে। বাড়ির আঙিনা, বারান্দা, রাস্তার পাশে ইত্যাদি সবখানেই তুলসীগাছ জন্মে থাকে। বাংলাদেশে পাঁচ প্রজাতির তুলসী জন্মাতে দেখা যায়। এগুলো হলো কালো তুলসী, বন তুলসী, বাবুই তুলসী, রাম তুলসী ও শ্বেত তুলসী। ভারতে এ পাঁচ প্রজাতি ছাড়াও আরও তিন প্রজাতির তুলসী পাওয়া যায়, সেগুলো হচ্ছে -কর্পূর তুলসী, লেবু তুলসী ও Ocimum filamentosum. তুলসী চিরহরিৎ, এটি আমাদের প্রচুর অক্সিজেনের যোগান দিয়ে থাকে।

তুলসীগাছ

পবিত্র আচারাদিতে ব্যবহার

হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিভিন্ন পূজা পার্বণে তুলসীপাতা অর্ঘ্য বা পূজার উপচার হিসেবে ব্যবহার হয়। তুলসীগাছকে পবিত্র উদ্ভিদ হিসেবে এ ধর্মাবলম্বীগণ মনে করে থাকেন। সৎকার ক্রিয়ায় শবের চোখের উপর তুলসীপাতা দেয়া হয়। তুলসীর কান্ডের কাষ্ঠল অংশ দিয়ে মালা তৈরি করা হয় যা বৈষ্ণব ভাবাবলম্বী ভক্তের গলায় শোভাবর্ধক হিসেবে দেখা যায়।

বাবুই তুলসী

ঔষধি গুণাগুণ

তুলসী ঔষধি গুণে ভরপুর এক অতুলনীয় উদ্ভিদ। জ্বর, সর্দিকাশি থেকে শুরু করে ক্যান্সার নিরাময়ে তুলসীর ব্যবহার সম্পর্কে জানা যায়।

  • সামান্য সর্দি-কাশিতে তুলসী পাতার রস সেবন করলে উপশম হয়।
  • জ্বর নিরাময়ে তুলসীর পাতা মধু সহযোগে সেবন করা হয়।
  • তুলসীপাতার রস হাঁপানি, এলার্জি, ঘামাচি ও চুলকানি রোধে উপকারী।
  • তুলসীপাতা বেটে হাম-বসন্তের ক্ষত বা দাগে ব্যবহার করলে দাগ দূর হয়।
  • দাদ নিরাময়ে আক্রান্ত স্থানে তুলসীপাতার রস ব্যবহার করা হয়।

    কালো তুলসী
  • তুলসীতে যেসব অ্যালকালয়েড থাকে তা লিভারের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
  • নিয়মিত তুলসীপাতা চিবিয়ে খেলে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • মাথা ব্যথা কমাতে তুলসীর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
  • পোকার কামড়ের প্রদাহ বা জ্বালা কমাতে ব্যবহার হয় তুলসী পাতার রস।
  • শ্বাসকষ্ট, কানের ব্যথা, পেট কামড়ানি দূর করতে তুলসী ভূমিকা রাখে।

এছাড়াও তুলসীপাতা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণের জন্য খাদ্যদ্রব্য ব্যাকটেরিয়ামুক্ত রাখতে এবং পানি বিশুদ্ধ করার কাজেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *