মেসি নেই, এমবাপ্পে-নেইমারদের হার ৩ গোলে

সামনে কোনো লক্ষ্য না থাকলে যা হয় আরকি! সহজ কাজগুলোও তখন সহজে হয় না। পিএসজির এখন সেই দশা।

রিয়াল মাদ্রিদের অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের শিকার হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ ষোলোতেই ছিটকে পড়েছে পিএসজি। ফ্রেঞ্চ কাপে তো আগেই বাদ পড়েছিল শেষ ষোলোতে। এদিকে লিগেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা তেমন নেই। সবকিছু মিলিয়ে মার্চের শুরুতেই যেন মৌসুমটা শেষ হয়ে গেছে পিএসজির। মেসি, নেইমার, এমবাপ্পেদের এখন বুঝি মাঠে নেমে নিজেদের টানতেই খুব ক্লান্তি লাগে!

মোনাকোর মাঠে আজ অবশ্য মেসি ছিলেন না, আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড পেটের পীড়ায় ভুগছেন কদিন ধরে। কিন্তু নেইমার-এমবাপ্পে তো ছিলেন! লিগে আগের পাঁচ ম্যাচে মাত্র এক জয় পাওয়া, পয়েন্ট তালিকার আট নম্বরে থাকা মোনাকোকে হারাতে অতটুকুই যথেষ্ট হবে পিএসজির, এমন ভেবে নেওয়ার মানুষই হয়তো ম্যাচের আগে দলে ভারী ছিলেন। কিন্তু ম্যাচ শেষে চিত্রটা পুরোপুরি উল্টো। ৩-০ গোলে হেরে এসেছে পিএসজি!

এই শতাব্দীতে পিএসজির বিপক্ষে এটিই মোনাকোর সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়। এর আগে ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে পিএসজির মাঠেই ৩-০ গোলে জিতেছিল মোনাকো। এবারের লিগে সর্বশেষ ৫ ম্যাচের তিনটিতেই হার পিএসজির! আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে প্রতিপক্ষের মাঠে সর্বশেষ ৪ ম্যাচেই হেরেছে পিএসজি—২০১১ সালে কাতারি মালিকানায় যাওয়ার পর এমনটা আর হয়নি, সর্বশেষ হয়েছিল ২০০৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১০ সালের জানুয়ারির মধ্যে (৫ ম্যাচে হার)।

আজ ম্যাচ শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এমবাপ্পে যা বলেছেন, তা-ই হয়তো ঠিক, ‘আমাদের এখন লক্ষ্য লিগ জেতা। বাকি কিছুতে আসলে কিছু যায়-আসে না। আমরা যদি ৮-৯ গোলেও জিতি, তবু মানুষ চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়ার কথাই ভাববে। এখন আমাদের দরকার পেশাদার থাকা, সমর্থকদের প্রতি সম্মান দেখানো।’ হয়তো সতীর্থদের প্রতিই এই আহ্বান ফরাসি তারকার!

মোনাকোর মাঠে আজ পিএসজি বিরতির আগে তো যেন ঘুমিয়েই ছিল। বিরতির আগের ৫-৭ মিনিটই যা খেলেছে, তার আগে মোনাকো যে শুধু একটা গোল পেয়েছে, সেটির কিছুটা কৃতিত্ব পিএসজির রক্ষণের, বাকিটা মোনাকোর আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের ‘বদান্যতা’র।

৮ মিনিটের মধ্যে দুবার বেন ইয়েদেরকে গোলবঞ্চিত করেছেন পিএসজি গোলকিপার দোন্নারুম্মা। ১০ মিনিটে তো কীভাবে গোল পায়নি মোনাকো, সেটিই বরং বিস্ময়জাগানিয়া। পিএসজির নড়বড়ে রক্ষণের সুবিধা নিয়ে বেন ইয়েদের পাস দেন লুকাসকে, সেখান থেকে গোল মিস করাই তাঁর জন্য কঠিন ছিল। কিন্তু কঠিন কাজটাই করে দেখালেন লুকাস। শট নিতে দেরি করলেন, মারকিনিওস এসে ব্লক করে বাঁচালেন পিএসজিকে।

১৩ মিনিটে বেন ইয়েদের একটুর জন্য বল পায়ে লাগাতে না পারায় গোল পাননি, ২১ মিনিটে দোন্নারুম্মা ঠেকিয়েছেন লুকাসের শট। অবশেষে ২৫ মিনিটে গিয়ে প্রাপ্য গোলটা পেয়েছে মোনাকো। দারুণ গোলেই অপেক্ষা ঘুচল! ডান দিক দিয়ে ছুটে বেরিয়ে বক্সে বেন ইয়েদেরের দিকে ক্রস ফোফানার, চোখধাঁধানো ব্যাক ফ্লিকে বল জালে জড়ান বেন ইয়েদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *