কালোটাকার মালিকদের জন্য কোন সরকারের কত ভালোবাসা

বাংলাদেশে কালোটাকা সাদা করার আগ্রহ সব সরকারেরই। সারা কম, তারপরও সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহের অভাব ছিল না সরকারগুলোর। দেখা গেছে, সুযোগ থাকলেও খুব কম টাকাই বৈধ হয়েছে। বরং কালোটাকা পাচার হয়েছে বেশি। সুযোগ দিতে সরকারের উদ্যোগ যতটা, কালোটাকার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় ক্ষেত্রে নেই ততটা তৎপরতা।

জিয়া ও এরশাদ আমলের চিত্র

এরপর ১৯৮১-৮২ অর্থবছরের বাজেটে একটু ভিন্নভাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়। সে সময় অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান বলেছিলেন, এক লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যবসায়ে পুঁজি বিনিয়োগকারী নতুন করদাতারা যদি তাঁদের পুঁজির কমপক্ষে এক-চতুর্থাংশ নিট আয় দেখান, তাহলে এ পুঁজি বিনিয়োগের উৎস নিয়ে প্রশ্ন করা হবে না।

এরপর আবার সামরিক আইন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সামরিক আইন জারি করেন লে. জেনারেল এরশাদ। সামরিক আইনের ৫ নং ধারায় ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়। এই সুযোগ ছিল টানা ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত।

এরশাদের আমলেই ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরের বাজেটে সে সময়কার অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘কোম্পানি ছাড়া অন্যান্য করদাতা ৮৭-৮৮ কর নির্ধারণী বছরের আয়কর রিটার্নে অন্যান্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত আয় খাতে যেকোনো অঙ্কের আয় দেখিয়ে শতকরা ২০ ভাগ হারে আয়কর প্রদান করলে কোনো প্রশ্ন করা ছাড়াই তা গ্রহণ করা হবে।’ এ সময় ২০০ কোটি কালোটাকা সাদা হয় এবং তাতে সরকার রাজস্ব পায় ৪০ কোটি টাকা।

Freelancing Process

 

এর পরও এরশাদ সরকার পরপর দুই অর্থবছরে একই সুযোগ রেখে দিয়েছিল। তবে নিয়মকানুন আরও সহজ করে দেওয়া হয়েছিল। বাজেটেই ঘোষণা দেওয়া হয়, ১০ শতাংশ কর দিয়ে শিল্পে বিনিয়োগ করলে বিনা প্রশ্নে তা মেনে নেওয়া হবে। এই সুযোগ নিয়ে ১৯৮৮-৮৯ অর্থবছরে ২৫০ কোটি টাকা সাদা হয় এবং সরকার আয় করে ২৫ কোটি টাকা। ১৯৮৯-৯০ অর্থবছরেও একই সুযোগ বহাল রাখা হয়। এই অর্থবছরেই বরং তুলনামূলকভাবে বেশি অর্থ সাদা হয়। এ সময় সব মিলিয়ে ৪০০ কোটি টাকা সাদা হয় আর তাতে সরকার কর পায় ৪০ কোটি টাকা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *