নব্বইয়ের দশকে দুজনেই ছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের বড় তারকা। ১৯৯২ বিশ্বকাপজয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। পরে পাকিস্তানের অধিনায়কও হয়েছেন দুজন। এক সঙ্গে খেলেছেন দীর্ঘ দিন। কিন্তু আজ এত বছর পর ওয়াসিম আকরামের বিরুদ্ধে আমির সোহেলের অভিযোগটা চমকে দিতে পারে যেকোনো ক্রিকেটপ্রেমীকেই। সাবেক ওপেনার সোহেল বলেছেন, ১৯৯২ বিশ্বকাপের পর একমাত্র আকরামের কারণেই বিশ্বকাপ জিততে পারেনি পাকিস্তান। পাকিস্তান ক্রিকেটে এই বাঁ হাতি ফাস্ট বোলারের সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে, ৯২ এর পর প্রতিটি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ব্যর্থতা নিশ্চিত করা।
একটা সময় সাঈদ আনোয়ারের সঙ্গে আমির সোহেলের ওপেনিং জুটি সমীহ জাগিয়েছিল ক্রিকেট দুনিয়ায়। দুই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান ইনিংসের শুরু থেকেই হন্তারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন প্রতিপক্ষের জন্য। সাবেক এই ব্যাটসম্যান মনে করেন, ১৯৯২ বিশ্বকাপ জয়ের পর ২০০৩ সাল পর্যন্ত প্রতিটি বিশ্বকাপেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ছিল পাকিস্তানের জন্য। সম্ভাবনাও ছিল যথেষ্টই। কিন্তু পাকিস্তান তা জিততে পারেনি। এজন্য তিনি আকরামকেই দায়ী করেন, ‘দেখুন পাকিস্তান ক্রিকেটে ওয়াসিম আকরামের সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে ১৯৯২ সালের পর বিশ্বকাপ না জেতাটা নিশ্চিত করা। প্রতিটি বিশ্বকাপের আগেই মোটামুটি সফল একজন অধিনায়ককে বদলে আকরামকে অধিনায়ক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত হওয়া উচিত নিরপক্ষেভাবে।’
নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সোহেল বলেন, ‘দেখবেন প্রতিটি বিশ্বকাপের আগেই কোনো না কোনোভাবে ওয়াসিম আকরামকে অধিনায়ক করা হয়েছে। বিরানব্বইয়ের বিশ্বকাপের এক বছর পর রমিজ রাজা অধিনায়ক হয়েছিলেন। এরপর সেলিম মালিক। কিন্তু কোনো কারণে তারা সাফল্য পেলেও ১৯৯৬ বিশ্বকাপে ওয়াসিম আকরামকে অধিনায়ক করা হয়েছে। সেবার সে একটু সিরিয়াস হলে আমরা বিশ্বকাপ জিততাম। আমার মনে হয় বিশ্বকাপের আগে দিয়ে নির্দিষ্ট কারণেই নাটক করে অধিনায়ক বদল করা হয়েছে। এটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
পাকিস্তানের হয়ে ৪৭ টেস্ট ও ১৫৬ ওয়ানডে খেলা এই ব্যাটসম্যান অবশ্য এর বেশি কিছু বলতে চাননি। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে সোহেল আকরামের ডেপুটি ছিলেন। বেঙ্গালুরুতে কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আকরাম চোটে পড়লে সোহেলই সেই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেদিন ভারতীয় পেসার ভেঙ্কটেশ প্রসাদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পরের বলে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছিলেন সোহেল। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে আকরামের নেতৃত্বে পাকিস্তান রানার্সআপ হয়েছিল। ফাইনালে তারা হেরেছিল স্টিভ ওয়াহ, শেন ওয়ার্ন, রিকি পন্টিং, গিলক্রিস্ট, ম্যাকগ্রাদের অস্ট্রেলিয়ার কাছে। ২০০৩ বিশ্বকাপে আকরাম খেললেও পাকিস্তানের অধিনায়ক ছিলেন ওয়াকার ইউনিস।