বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক বা সংক্ষেপে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলাধীন মাওনা ইউনিয়নের শাল বনের ৪৯০৯.০ একর বন ভূমি ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণির জন্য নিরাপদ আবাসস্থল হিসাবে পরিচিত। এ পার্কটি প্রতিষ্ঠা কার্যক্রম শুরু হয় ২০১১ সালের ২ ফেব্র“য়ারী । সাফারী পার্কের চারদিকে নির্মাণ করা হচ্ছে স্থায়ী ঘেরাা এবং উহার মধ্যে দেশী/বিদেশী বন্যপ্রাণীর বংশবৃদ্ধি ও অবাধ বিচরণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে যাতে পর্যটকগণ চলমান যানবাহনে অথবা পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করে শিক্ষা, গবেষণা ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ লাভ করবেন। সাফারী পার্কের ধারণা চিড়িয়াখানা হতে ভিন্নতর। চিড়িয়াখানায় জীবজন্তুসমূহ আবদ্ধ অবস্থায় থাকে এবং দর্শনার্থীগণ মুক্ত অবস্থায় থেকে জীবজন্তু পরিদর্শন করেন। কিন্তু সাফারী পার্কে বন্যপ্রাণীসমূহ উন্মুক্ত অবস্থায় বনজঙ্গলে বিচরণ করবে এবং মানুষ সতর্কতার সহিত চলমান যানবাহনে করে ভ্রমণ করতে পারবে। এটি সকল কে আনন্দ দেয়া,
সাফারী পার্কের মূল উদ্দেশ্য
- শাল বনের বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ।
- বাংলাদেশের বিরল ও বিলুপ্ত প্রায় বন্যপ্রাণীকে নিজ আবাসস্থলে এবং আবাসস্থলে বাহিরে অবস্থায় সংরক্ষণ ও উন্নয়ন সাধন ।
- ঢাকা মহানগরীর অতি নিকটে ইকো-ট্যুরিজমের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের বিকাশ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা ।
- চিত্তবিনোদন, শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা ।
- বন্যপ্রাণীর খাদ্য উপযোগী ফলজ, ফডার, ও মিশ্র প্রজাতির বাগান সৃজন ।
- শালবনের বন্যপ্রাণী যেমন বানর, মায়া হরিণ, বেজী,শাপ,হাতি, বনরুই, বাঘদাস, বন বিড়াল, খড়গোশ, শিয়াল, খেকশিয়াল ও অজগরসহ বিপন্ন বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল সৃষ্টি ও সংরক্ষণ করা ।
- বিরল ও বিপন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন বাঘ, চিতাবাঘ, সাম্বার হরিণ, মায়া হরিণ, চিত্রা হরিণ, প্যারা হরিণ এবং অন্যান্য তৃণভোজী বন্যপ্রাণীর প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও বংশবৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করা ।
- গণ্ডার, এশীয় হাতী, পরিযায়ী পাখী, জলজ পাখী, বনছাগল, সিংহ, শ্লথ বীয়ার, কালো ভাল্লুক, মিঠা পানির কুমির, লোনা পানির কুমির, নীল গাই, জলহস্তী ইত্যাদি বিপন্ন ও বিলুপ্ত বন্যপ্রাণীর প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণকরন ।
- আহত ও উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণীর চিকিৎসার নিমিত্তে বন্যপ্রাণীর সেবাশ্রম ও হাসপাতাল স্থাপন ।
- সারাদেশে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি
- https://youtu.be/xkpLF6dXPM8
সাফারী কিংডম
সাফারী কিংডমে পর্যটকগণ পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াতে পারবে এবং প্রাণিকূলকে ছোট-খাট বেস্টনীর মধ্যে আবদ্ধ রাখা হবে। সাফারী কিংডমের মূল লক্ষ্য হচ্ছে: বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর নৈপূণ্য ও খেলাধুলা প্রদশর্ণের মাধ্যমে পর্যটকদের চিত্তবিনোদন, মনের আনন্দ, ন্যপ্রাণী সংক্রান্ত শিক্ষা গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা। সাফারী কিংডম ৫৭৫.০ একর জাইগা নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে , এর প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র, জিরাফ ফিডিং স্পট, পেলিকেন আয়ল্যান্ড, বোটিং ও লেকজোন; বৃহৎ আকারের গাছপালা ঘেরা ক্রাউন্ট ফিজেন্ট এভিয়ারী, ধনেশ এভিয়ারী, প্যারট এভিয়ারীসহ দেশি-বিদেশী পাখির পাখীশালা (আরধৎু), কুমির পার্ক, অর্কিড হাউজ, প্রজাপতি কর্ণার, শকুন ও পেঁচা কর্ণার, এগ ওয়ার্ল্ড, কচ্ছপ-কাছিম ব্রিডিং সেন্টার, লামচিতা হাউজ, ক্যাঙ্গারু বাগান, হাতী-শো গ্যালারী, ময়ুর/মেকাউ ওপেন ল্যান্ড, সর্প পার্ক, ফেন্সি কার্প গার্ডেন, ফেন্সি ডার্ক গার্ডেন, লিজার্ড পার্ক, ফুডকোটর্ , পর্যবেক্ষন টাওয়ার ও জলাধার ইত্যাদি।
সাফারি পার্ক প্রবেশ
সকল বাংলাদেশিদের জন্য পার্কে প্রবেশ টিকেটের মূল্য ৫০ টাকা তবে ১৮ বছরের নিচে ছেলেমেয়েরা ২০ টাকায় পার্কে প্রবেশ করতে পারে। আর সাধারণ অথবা শিক্ষা সফরে আসা ছাত্রছাত্রীদের পার্কে প্রবেশ করতে ১০ টাকা দিতে হয়। বিদেশী দর্শনার্থীদের জন্য পার্কে প্রবেশ মূল্য ৫ ডলার। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা সফরে আগতদের জন্যে স্পেশাল প্রবেশ ফি রয়েছে। যদি শিক্ষা সফরে আসা শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ৪০-১০০ জন হয় তাহলে সবার প্রবেশ করতে ৪০০ টাকা লাগবে। যদি শিক্ষার্থী সংখ্যা ১০০ এর বেশি হয় তাহলে প্রবেশ করতে ৮০০ টাকা লাগবে।
প্রাণ বৈচিত্র্য
সাফারি পার্কে আছেজলহস্তী, বাঘ, সিংহ, হাতি,ময়ূর, সম্বর হরিণ, মায়া হরিণ, চিত্রা হরিণ, ক্যাংগারু, জেব্রা, বানর, হনুমান, ভাল্লুক, গয়াল, কুমির,সাপ, বিচিত্র দরনের মাছ ও বিচিত্র পাখি।