চেন্নাই টেস্টে আজ ইংল্যান্ডকে ৩১৭ রানে হারিয়েছে ভারত। ৪৮২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই শ রানও তুলতে পারেনি সফরকারী দল।
১০০ রান তোলার আগেই ৫ উইকেট হারানোয় ইংলিশদের বড় ব্যবধানে হার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। বেন স্টোকস ৯০ আউট হওয়ার পর দলীয় ১১০ রানে যখন ওলি পোপ ফিরলেন, তখন থেকেই শুরু হয় বিশেষ এক ‘ক্ষণগণনা’—৯৯৮, ৯৯৯…।
মাহেন্দ্রক্ষণটির দেখা পেতে সময় লাগেনি। ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে এই মাহেন্দ্রক্ষণের দেখা পাইয়ে দিয়েছেন কুলদীপ যাদব। দলীয় ১১৬ রানে বেন ফোকসকে তুলে নেন এ স্পিনার।
আর এই আউটের মধ্য দিয়ে ১০০০তম উইকেটের দেখা পেয়ে যান কোহলি। একটু ভুল হলো, আর ভ্রুকুটির আগে পুরোটা শুনুন—অধিনায়ক কোহলির অধীনে টেস্টে হাজারতম উইকেট ভারতের বোলারদের।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে টেস্ট নেতৃত্ব পান কোহলি। সাত বছরও হয়নি, ছয় বছর পার হয়েছে মাস দুয়েক আগে। এর মধ্যে কোহলির অধীনে বোলারদের হাজারতম উইকেটের দেখা পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়।
এখানে বোলারদের অবদান সিংহভাগ হলেও অধিনায়কেরও ভূমিকাও একেবারে ফেলনা নয়। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে সময়মতো সঠিক বোলার ও ঠিক জায়গায় ফিল্ডার রাখার মুনশিয়ানা দেখাতে হয় অধিনায়ককে। কোহলির প্রাপ্য এ ভূমিকাটুকু স্বীকার করতেই হবে।
আর এটুকু ভূমিকা দিয়েই কোহলির নেতৃত্ব দেওয়া ৫৮ ম্যাচে ১০০৩ উইকেটের দেখা পেয়েছেন ভারতের বোলাররা। ভারতীয় অধিনায়কের অধীনে বোলারদের গড় ২৫.৫৮ ও স্ট্রাইক রেট ৫২.৫, অর্থাৎ প্রতি ২৫ রান (প্রায়) দেওয়ার বিনিময়ে একটি করে উইকেট অথবা ৫২ (প্রায়) বল অন্তর একটি করে উইকেটের দেখা পেয়েছেন কোহলির বোলাররা।
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে কোহলির আগে আরও পাঁচ অধিনায়কের নেতৃত্বে ১ হাজারের বেশি উইকেট পেয়েছেন বোলাররা। তবে কোহলি এ জায়গায় আগের পাঁচ অধিনায়কের চেয়ে একটি জায়গায় এগিয়ে।
তাঁর অধীনে ভারতীয় বোলারদের গড় ও স্ট্রাইকরেট আগের চার অধিনায়কের অধীনে খেলা বোলারদের চেয়ে ভালো।
এ প্রসঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই টেস্টে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া অধিনায়কদের নামগুলো মাথায় আসে সবার আগে। কেননা, বোলারদের হাজার উইকেটের মাইলফলক ছুঁতে একজন নির্দিষ্ট অধিনায়ককে বেশ ভালোসংখ্যক ম্যাচে নেতৃত্ব দিতে হবে।
পরিসংখ্যানের পাতায় তাকালে ভাবনাটা কিন্তু সঠিক। কেননা, টেস্টে সর্বোচ্চসংখ্যক ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া শীর্ষ পাঁচ অধিনায়কই আছেন এ তালিকায়। দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথ (১০৯ ম্যাচ), অস্ট্রেলিয়ার অ্যালান বোর্ডার (৯৩ ম্যাচ), নিউজিল্যান্ডের স্টিভেন ফ্লেমিং (৮০ ম্যাচ), অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং (৭৭ ম্যাচ) ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্লাইভ লয়েড (৭৪ ম্যাচ)।
স্মিথের কথায় আগে আসা যাক। দক্ষিণ আফ্রিকাকে টেস্টে ১১ বছর নেতৃত্ব দিয়েছেন সাবেক বাঁহাতি এ ওপেনার। এ সময় তাঁর অধীনে ১৭৮০ উইকেট নিয়েছেন প্রোটিয়া বোলাররা। স্মিথের অধীনে বোলারদের গড় ৩১.১৫ ও স্ট্রাইকরেট ৫৯.৭।
মোট ৪৯ জন ক্রিকেটার খেলেছেন স্মিথের অধীনে। কোহলির অধীনে এ পর্যন্ত খেলেছেন ৪০ ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডার ১০ বছর নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁর দেশের জাতীয় দলকে।
এ সময় তাঁর অধীনে ১৩৯২ উইকেট নেওয়া বোলারদের গড় ৩২.২৮ ও স্ট্রাইকরেট ৭১.৫। মোট ৫৬ ক্রিকেটার খেলেছেন বোর্ডারের সময়ে।